বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি খোয়াব - মুহাম্মদ আল ইমরান



আজ শুক্রবার। এই দিনে দুইটা কাজ করা হবে। একটি কাজ হলো, ঘুরতে যাওয়া এবং অন্যটি গল্প শোনা। রাফি স্কুল থেকে একটি পুরুষ্কার পেয়েছে। তাই সে ঠিক করেছে আজ নামাজ থেকে এসেই নতুন বইটি পড়বে যা সে পুরুষ্কার হিসেবে পেয়েছে। বাসায় আজ অনেক আয়োজন৷ তার ছোট মামাও আসবে। ছোট মামাকে পেলে রাফির আর কিছু দরকার হয় না। ছোট মামা হলো রাফির কাছে রোবটের থেকেও অনেক বড় কিছু। সে সব কিছু পারে। তবুও আজ রাফি ঠিক করেছে ছোট মামার সাথে কথা বলবে না। কথা বললে আর বই পড়া হবে না। ছোট মামা যা মজার মানুষ তার কাছ থেকে কেউ রেহাই পায় না। রাফি সকালে ঘুম থেকে উঠে আজকের দিনের রুটিন করেছে। তারপরই দরজার অপর পাশ থেকে আওয়াজ এলো। সম্ভবত রাফির বোন। রাফি বললো আসছি আপু!


- আমাকে একটা সাহায্য করবি ভাই?

- কি করতে হবে?

- পৃথিবীতে যদি কোন মানুষ কথা শুনতে খারাপ লাগে!

- আর বলতে হবে না। জানি সেই মানুষটি ছোট মামা।

- এজন্যই তুমি আমার লক্ষ্মী ভাই।

রাফি একটু তিক্ত ভাবে বললো, নতুন কোন প্লান আছে? ওর বোন বললো না। রাফি বলল আচ্ছা যাও আমি ভেবে দেখি।

আর চিন্তা ভাবনা করা হলো না। নামাজের সময় হয়েছে। নামাজ পরে এসে রুমের দরজা বন্ধ করে রাফি বইয়ে হাত দিবে এমন সময় মামার কন্ঠে রাফি রাফি ডাক। কোন সারা না পেয়ে রাফির দরজার পাশে লাগানো স্কিনের দিকে চোখ গেল মামার। তারপর সে বলছে- আপা! আপা! 


আপা মানে রাফির মা। তিনি একটি মহৎকর্ম করেন। তা হলো রান্না করা। আপা ডাক শুনে কাজের মেয়ে রাবেয়া এলো তারপর বললো- কি হয়েছে আপনার কাকা। 

- মাথা ব্যথা। তোর কোন সমস্যা? 

- চা খান ভালো লাগবে। ঘুমাইলেও মাথা ব্যথা কমে, মুই কবিরাজি হুজুরের কাছ থাইকা হুনছি।

- এখান থেকে যা। 

- মোরা গরিব বলে মোদের তো যাইতেই বলবেন। মুই গরিব হইতে পারি, তয় আম্মের মতো বেকার বিজ্ঞানী না।


রাফির ছোট মামা তার বোনের অফিসে অর্থাৎ রান্না ঘরে যাচ্ছে। রাফি ঘরে বসে এই দৃশ্য দেখে হাসছে। রাফি বই পড়ছে আর যখনই কিছু দেখতে ইচ্ছে করে তা দেখতে পারে। কোন স্কিন প্রয়োজন হয় না। কেমন করে জানি চোখের সামনে ভেসে উঠে। ৭ম প্রজন্মের মত ডিভাইসের ব্যবহার। অন্য কেউ এরকম দেখতে পারে না। শুধু রাফি পারে। কেননা রাফি একজন ভদ্র ছেলে। সে কোন দুষ্টমি করে না। বেশি বেশি বই পড়ে। 


কাজের মেয়ে রাবেয়া চলে গেল রাফির বোনের রুমে তারপর বললো-

- রচনা বোইন! রচনা বোইন!

- তোকে কত বার বলেছি কারো রুমে প্রবেশ করার সময় আগে অনুমতি নিতে হয়।

- সময় তো নাই মোর। কত কাম। অতি গুরুত্বপূর্ণ খবর তাই কইয়া আসি নাই। হোনেন হইছে কি!

- আগে বের হ। তারপর অনুমতি নিয়ে প্রবেশে কর।

- আচ্ছা।

(দরজার কাছে গিয়ে।)

- রচনা বোইন। অনুমতি নেলাম।

- না! বল আপু আমি কি আসতে পারি?

- আচ্ছা। রচনা বোইন আমি কি আসতে পারি?

- হ্যাঁ আসো। কিছু বলবে?

- রচনা বোইন মামা আসছে এবং তার মাথা ব্যথা।

- তো আমার কি?

- এটা চিন্তার বিষয় না।

- মাথা ব্যথা নিয়ে বেশি চিন্তা করি না। 

- কেন রচনা বোইন?

- যত চিন্তা তত ব্যথা তাই।

- ও।

- হ্যাঁ। এবার কথা শেষ হলে আসতে পারো!


রাফির মামা রান্না ঘরে প্রবেশ ক্ষনে বলে, আপা রাফির নোটিশ দেখছো? রাফির মা কোন উত্তর না দিয়ে বলে, ভাই আসতে কোন সমস্যা হয়নি তো? আজ তোর জন্য দারুণ একটা আইটেম রান্না করেছি। একটু খেয়ে দেখবি আস।

- কি জিনিস?

- এই নে আগে মুখে দে। নাম দেয়া হয় নি এখনও। - কি নাম দিবে আপা?

- জানি না। আজ তুই নাম দিস।

- আচ্ছা দেখি। রচনা কোথায়? 

- কোথায় আর গেমস খেলছে। রাফির কথা কি যেন বলছো?

- আরে খেতে খেতে তো মনেই নেই। তুমি কি রাফির নোটিশ দেখছো?

- না দেখা হয় নি।

রাফির মা তারাতাড়ি জিমেইল ওপেন করে দেখে রাফি তার নিকট একটি মেইল লিখেছে।


প্রিয় আম্মু,

প্রথমে আমার সালাম নিবা। আমি জানি আজ তুমি যা রান্না করবে সেটা অনন্য হবে। মামা ইতিমধ্যে আমার বিষয় নিয়ে বেশ চিন্তিত তাকে বলে দিও চিন্তা না করতে। আর হ্যাঁ সে আজ তোমার নতুন আইটেমের নাম দিবে, চালাই। যা তোমার পছন্দ হবে না। কিন্তু ভাই নাম দিয়েছে বলে কিছু বলবে না। সেটাই মেনে নিবে। খাবারের পরে রচনা আপু অসুস্থ হয়ে পরবে। তবে আগেই বলে রাখি ডাক্তার দেখাতে হবে না। আমার খাবার তিব্বতের কাছে পাঠিয়ে দিও। অনুগ্রহ করে আমার কথা মামার কাছে বলবে না। 

ইতি তোমার রাফি।


মেইল পড়া শেষ হওযার পরে এখন খাবারের জন্য আয়োজন চলছে। আজ বাসায় রাফি নেই তাই তার মামার প্রচন্ড খারাপ লাগে। রাফি না থাকলে তিব্বতে সাথে কথা বলে সময় কাটে মামার। তিব্বতের কথা মনে হওয়াতে রাফির মামা তিব্বতকে খোঁজ করে। কিন্তু হেলমেট পরার পরও তিব্বতের কাছ থেকে কোন সংকেত পাচ্ছে না মামা। দুঃখের বিষয় হলেও সত্য কিছুই করার নেই। কেননা তিব্বতের গোপন সংকেত রাফির কাছে। তাই তিব্বত সম্পর্কে শুধুমাত্র রাফি জানে। কিভাবে সংকেত না পেলে সংকেত ছাড়া তিব্বতকে খুঁজতে হয় সেই সম্পর্কে গোপনীয় প্রতিবেদনে লেখা আছে। কিন্তু রাফি বাসায় নেই তাই এই প্রতিবেদন দেখা যাবে না। অন্যের গোপনীয়তা সম্পর্কে জানা ঠিক নয়। তাই রাফির মামা বসে রইল। 


হঠাৎ রাফির মামার মনে হল। রাফি তাকে একটি জিনিস শিখিয়েছে। সেটি হলো কিভাবে হারানো জিনিস খুঁজতে হয়। ৭ মাস আগের কথা-

রাফি স্কুল থেকে এসে দেখতে পেলো তার মামা লাইব্রেরিতে একটি বই খোঁজ করছে। কিন্তু পাচ্ছে না। রাফি ফ্রেশ হয়ে এসে বললো,

- মামা বইয়ের নাম কি?

- আমার ছেলেবেলা।

- লেখক কে?

- হুমায়ুন আহমেদ।

- এদিকে আসো, আর খুঁজতে হবে না। 

- বল।

- তুমি এখন চিন্তা করো। ঐ বইটি তোমার হাতের কাছে এবং তুমি ঐ বইটার ১৫ নম্বর পাতায় আছো। তারপর ঐ পাতা পড়ে বইটি কাউকে পড়ার জন্য দিয়েছো। সে তোমাকে বইটি ফেরত দিল। 

- তারপর?

- এখন পেয়ে যাবে।

- কিভাবে পাবো? শুধু শুধু আমার সময় নষ্ট করলি ভাগিনা।

- সময় নষ্ট হলে আমি দুঃখিত!

- তারাতাড়ি বই খুঁজে দিয়ে সাহায্য কর। অন্যকে সাহায্য করা ভালো। 

- আচ্ছা মামা।


তারপর রচনার পড়ার টেবিলে বইটা পাওয়া যায়। এখন রোবট তিব্বতকে এই পদ্ধতিতে খোঁজার জন্য তৈরি হয় রাফির মামা। সে চিন্তা করবে এমন সময় দরজায় নক করছে কে যেন। রাফির মা বলল, "শোয়েব, দেখ তো কে এলো!" তারাপর রাফির মামা শোয়েব দরজার কাছে গিয়ে দেখে কেউ নেই। তারপরই রাফির মামা সন্দেহ করে সম্ভবত তিব্বত এসেছে। তিব্বত আসলে তিব্বতের রেকর্ড সংগ্রহ করে না দরজার সাথে থাকা রেকর্ডার। যদি বাতাসের জন্য দরজায় শব্দ হয় তাহলে বাতাসের ছবিও ধরে রাখে। কিন্তু তিব্বতের ছবি রাখে না। 


রাফির সাথে দেখা করার জন্য তিব্বত এসেছে। রাফি তিব্বতকে গোপনে এনেছে। গোপনে আনার দু'টি কারণ। প্রথম কারণ হলো মামার নিকট রাফি তার অবস্থা জানাতে চায় না। দ্বিতীয় কারণ সবাইকে না জানিয়ে রাফি একটা কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে সবাই না জানলেও রাফি তার মাকে অবশ্যই বলবে সে কি করতে যাচ্ছে। রাফির মামা তিব্বতকে তৈরি করেছে পৃথিবীতে থাকতে। কিন্তু আজ তারা পৃথিবীতে নেই তবুও তিব্বত আছে তাদের সাথে। রাফি তিব্বতকে বলছে-

- আমার হাতে এটা কি তা দেখছো?

- হ্যাঁ। একটি বই। যা ডিজিটাল কাগজ দিয়ে তৈরি।

- বইটির নাম হলো বসুমতী।

- হ্যাঁ। যা একটি সাহিত্য নাম বটে। আসল নাম পৃথিবী।

- তাহলে আমাকে নিয়ে যাও। 

- না এটা সম্ভব নয়।

- দেখতেও পারবো না?

- কত সালের কত তারিখ দেখতে চাও?

- এই বইটা দেখো। এই বইয়ে বর্ণনা দেয়া আছে পৃথিবী কেন অযোগ্য হলো। আমি এটা দেখতে চাই।

- দেখাবো। তবে তুমি তোমার মায়ের অনুমতি নিয়ে নাও।

- আচ্ছা নিচ্ছি। 


রাফি মায়ের অনুমতি নেয়ার জন্য চলে গেল। দেখলো দরজার সামনে মামা দারিয়ে আছে। রাফিকে দেখে মামা বললো-

- রাফি তুমি কোথায় ছিলে?

- মামা তুমি কখন এলে? 

- রাফি প্রশ্নের জবাবে প্রশ্ন হয় না। হয় উত্তর, আগে উত্তর দাও।

- মামা তোমার এই নিয়ম আমার পছন্দ না।

- নিয়ম আছে বলেই আমরা আছি ভাগনে। নিয়ম ছাড়া কোন কিছু ঠিক থাকে না।

- ও আচ্ছা। মামা আমি আমার রুমে ছিলাম। নতুন বই পেয়েছি। 

- ভালো। কি বই? কতদূর পরেছো? শেষ পড়া? লেখক কে?

- উত্তর সমূহ ইমেইল পাঠিয়ে দিব।

- রাফি প্রযুক্তি ব্যবহার করবা ঠিক আছে কিন্তু অযথা নয়। তুমি আমকে এখন উত্তর দিতে পারো। নতুবা সামান্য পরে দাও। সেটা বলো কিন্তু ইমেইল কেন?

- আচ্ছা। কিং চিৎ পরে উত্তর পাবে।



- আম্মু, আম্মু, আম্মু।

- রাফি আমি এখানে আছি!

- আম্মু আমি তিব্বতের কাছ থেকে পৃথিবী দেখতে পারি?

- কেন বাবা?

- আমরা কেন পৃথিবী থেকে আসলাম সেটা দেখবো। তবে তুমি কাউকে বলবে না।

- তোর মামাকে…

- না না না আম্মু। মামাকে বললে সে তার তিব্বতকে আমার থেকে নিয়ে যাবে।

- বাবা তবুও মামার অনুমতি নিয়ে নাও। তার তৈরিকৃত রোবটের থেকে কোন কিছু দেখার জন্য তার অনুমতি প্রয়োজন।

- আম্মু মামা তো আমাকে তিব্বতের নিয়ন্ত্রণ দিয়েছে। তাই আমি নিজের মত ব্যবহার করতে পারি।

- তাহলে অন্ততপক্ষে তিব্বতের অনুমতি নাও।

- আচ্ছা আম্মু। তবে তিব্বত কিন্তু তোমার অনুমতি নিতে বলেছে।

- আচ্ছা বাবা।


রাফি এরপর মায়ের কাছ থেকে রুমে গেল। অতঃপর তিব্বত রাফিকে বললো, ঐ শর্তগুলো পূরণ করো। তিব্বত শর্তহীন সম্ভব নয়? রাফি আমাদের এই সম্প্রদায় থেকে পৃথিবীর কোন তথ্য প্রকাশ করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। আচ্ছা কেন এমন হলো তিব্বত? রাফি এ সম্পর্কে মামা বলতে পারবেন। তিব্বতের কাছ থেকে এ কথা শুনে রাফি মামার কাছে গেল।

- রাফি বই সম্পর্কে কিছু বলো নি তো।

- মামা বইয়ের নাম বসুমতী।

- কি বলো এই বই তোমার কাছে কি করে এলো? এই বই তো পৃথিবীর জন্য।

- মামা স্কুল থেকে দিয়েছে।

- রাফি এটা তুমি কি পড়েছো?

- হ্যাঁ মামা।

- কাউকে বলবে না কিন্তু এই বইয়ের কথা।

- কেন মামা? কি আছে এই বইয়ে? কোন বিশেষ রহস্য? যা পড়া নিষেধ এরকম কিছু? 

- এই বইয়ে বলা ছিলো কিভাবে পৃথিবী রক্ষা করা যাবে। কিন্তু…

- কিন্তু কি মামা? বলো মামা!

- তোমাকে বলা ঠিক হবে না।

- তোমার সাথে আর কোন কথা নেই।

- আচ্ছা তোমাকে আমার অফিসে একদিন নিয়ে যাবো তারপর সব দেখিয়ে বলবো। 

- এখনই চলো।

- পরে। তুমি তিব্বতকে সাধারণ সংকেত ব্যবহার করবে এখন থেকে।

- জি মামা।


তিব্বত এখন মামার সামনে চলে আসলো। তিব্বতের কাছ থেকে সকল তথ্য নিয়েছে রাফির মামা। রাফির সকল ধারণা জানতে পারে। তিব্বতকে দিয়ে রাফি যেসব চিন্তা ধার করেছে তাও জানতে পারে। রচনাকে ডেকে নিয়ে আসো। তিব্বত মামার কথা শুনার সাথে সাথে রচনার রুমের সামনে চলে গেল। রচনাকে সাঙ্গে করে নিয়ে এলো৷ রাফি তুমি একটু শুয়ে থাকো যাও। রাফি তার রুমে চলে গেল।

- রচনা তোমার কাজ কী?

- তেমন কিছু মামা। গেমস খেলি আর বই পড়ি। এই গ্রহে কোন পরিক্ষা নাই। বাহ্ কত ভালো।

- তিব্বতকে নিয়ে একটা কাজ করে দাও।

- কি কাজ মামা।

- তিব্বত তোমাকে রাফির স্কুল থেকে প্রাপ্ত বইয়ের দৃশ্য দেখাবে।

- আমি সেগুলো দেখবো।

- হ্যাঁ দেখবে আর সেই দৃশ্য তুমি আর্ট করবে।

- আর্ট কেন মামা? ভিডিও করে রাখি।

- না। ভিডিও নয় আর্ট প্রয়োজন।

- আচ্ছা মামা। এই যে তিব্বত আসো।


রাফির রুমে গিয়ে মামা বলল,

- রাফি তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে।

- বলো মামা।

- রাফি তুমি কি এই গ্রহ নিয়ে খুশি নও।

- মামা এ কেমন কথা। এ কেমন গ্রহ কেউ কাউকে চিনে না, জানে না।

- আমি পৃথিবীর জন্য একটা বই লিখে ছিলাম। ভাগ্য ক্রমে তোমার নিকট যে বই আছে সেটি আমারই। কিভাবে তোমার কাছে বই এসেছে সেটা আর্ট করছে রচনা। 

- মামা তাহলে তুমি এখানে কেন এলে?

- অনেক সময় সম্মতি না থাকলেও সেই কাজ করতে হয় রাফি। আমি সবাইকে বলেছিলাম তোমরা বেশি করে বৃক্ষ রোপণ করো। কেউ আমার কথা শুনে নি। পৃথিবী থেকে বিতারিত হওয়ার একমাত্র কারণ হলো আমরা সবুজ রাখতে পারিনি পৃথিবীকে। 

- চলো মামা পৃথিবীতে। আবার নতুন করে গড়ে নেই সবুজ। যেখানে শুধুই সবুজ।…মামা তুমি কান্না করছো কেন?

- না রাফি কান্না করছি না। তবে পৃথিবীতে যাওয়ার চেষ্টা করবো। গড়ে তুলবো সবুজ বৃক্ষ। আমরা যদি সভা সেমিনার না করে শুধু বৃক্ষ রোপণের কাজ করে যেতাম তাহলে আজ এখানে আসতে হত না। 

- মামা আমি আর এখানে থাকতে চাই না। আমি পৃথিবীতে যাবো। 


হঠাৎ রাফির মামা চলে গেল। রাফি কান্না শুরু করলো। মামা, কোথায় গেলে মামা। আম্মু মামা কোথায়? আম্মু, আম্মু, আম্মু। তিব্বত, মামা কোথায়?

রাফির চিৎকার শুনে তার বাবা এসে বললো কি হয়েছে রাফি। কোন দুঃস্বপ্ন দেখেছো? তোমার আম্মু তো স্কুল থেকে আসে নি এখনও। তিব্বত কে?

রাফি অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো। কোন কথা বলল না। হাটতে হাটতে চলে গেল তার বোন রচনার রুমে। গিয়ে বললো- আপু আজ কি বার? তার বোন বললো, সোমবার। রাফি বলে আমি ঘুমের ভিতরে দেখি শুক্রবার। একথা বলে আবার শুয়ে পড়লো। পাশে রচনা কিসের যেন ছবি আর্ট করছে। 


রাফির বাবা রাফির মাকে ফোন করে বলে-

- তোমার ভাই কি দেশের রাষ্ট্রপতি?

- না তো। তবে শোয়েব ছোট থেকে স্বপ্ন দেখে রাষ্ট্রপতি হবে।

- ধুর কাকে যে কি বলি।

- কেন কি হয়েছে?

- শোয়েব আমার ফোন ধরছে না। তুমি শোয়েবকে বাসায় আসতে বলো। 

- কেন? বিশেষ কোন আয়োজন আছে?

- না তবে রাফি একটা খোয়াব দেখেছে। 

- আমার ভাই তোমার ছেলের স্বপ্ন বাস্তবায়নে জন্য বসে নেই। ওর অনেক কাজ আছে। 

- না কথা দিচ্ছি এই শেষ বার।

- তোমাদের আর শেষ হবে না। এই তো গত ৫ দিন আগে এসে গেল।

- প্লিজ। রাফি স্বপ্নে ওর মামাকে দেখেছে।

- আচ্ছা দেখি ফোন করে।


~ মুহাম্মদ আল ইমরান।


ছোটগল্পঃ খোয়াব।

লেখকঃ মুহাম্মদ আল ইমরান।

তারিখঃ ২৫/০২/২০২২

ধরণঃ সায়েন্স ফিকশন।

প্রকাশিতঃ ১০ই জুলাই, ২০২২

0/Post a Comment/Comments

Previous Post Next Post